যে ১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী

প্রিয় দর্শক আপনি যে বিষয়টি নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না, যে ১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী, প্রি ডায়াবেটিসের লক্ষণ, প্রি_ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ এবং টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মধ্যে পার্থক্য এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো। সমস্ত আর্টিকেল পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।

প্রি ডায়াবেটিসের লক্ষণ

আগাম সতর্কবার্তা ও লক্ষণগুলো প্রি-ডায়াবেটিস ভালো এমন একটি অবস্থা যখন রক্ত সর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয়, কিন্তু তা এখনো ডায়াবেটিস পর্যায়ে পৌঁছে নি। এটি ডায়াবেটিসের প্রাথমিক ধাপ এবং সময়মতো ব্যবস্থা নিলে এই অবস্থানকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। 

প্রি_ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ


অনেকেই প্রি-ডায়াবেটিসকে অবহেলা করেন, কারণ এর লক্ষণগুলো স্পষ্ট নয় বা সহজে চোখ এড়িয়ে যায়। তবে কিছু সাধারন লক্ষণ ও ঝুঁকির বিষয় জানা থাকলে আমরা আগেই সচেতন হতে পারি।

প্রি_ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ

  • অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা শরীরের কোষগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্লুকোজ ব্যবহার করতে না পারলে শক্তি কমে যায়। ফলে আপনি প্রায়ই ক্লান্তি বোধ করতে পারেন।
  • ওজন বৃদ্ধি বা সৃথূলতা বিশেষ করে পেটের চারপাশে চর্বি জমা পরলে তা প্রি_ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে।
  • পিপাসা বেশি লাগা ও প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে আপনার দেহ তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করতে চাই। ফলে বারবার প্রস্রাব হয় এবং পিপাসা লাগে।
  • ত্বকের পরিবর্তন ঘাড় কুচকি বা বগলের আশেপাশে কালো দাগ পরা প্রি_ডায়াবেটিসের একটি সাধারণ লক্ষণ।
  • ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া শরীর যদি শর্করা ঠিক ভাবে ব্যবহার করতে না পারে তাহলে খোদা লাগার পরিমাণ বাড়তে পারে।
  • দৃষ্টিশক্তি সমস্যা রক্তের শর্করা বেড়ে গেলে দৃষ্টিতে ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার মত সমস্যাও হতে পারে।

কারা বেশি ঝুঁকিতে আছেন

  1. পরিবারের কারো ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে।
  2. অস্বাস্থ্যকর খাবার ও নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম না করলে।
  3. উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগলে।
  4. বেশি ওজন বা সৃথুলতা থাকলে।
  5. ৪০ বছরের বেশি বয়স হলে।
  6. টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস কি

টাইপ ১ ডায়াবেটিস কী?

টাইপ ১ ডায়াবেটিসকে অনেক সময় জুভেনাইল ডায়াবেটিকস বা ইনসুলিন_ডিপেন্ডেন্ট ডায়াবেটিস বলা হয়। এটি একটি অটোইমিউন রোগ যেখানে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভুলবশত অগ্নাশয়ের ইনসুলিন উপাদানকারী কোষগুলো ধ্বংস করে ফেলে। ফলে শরীর পর্যন্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না।

লক্ষণ
  • খুব দ্রুত ওজন কমে যাওয়া।
  • অতিরিক্ত পিপাসা লাগা ।
  • বারবার প্রস্রাব হওয়া।
  • খুব বেশি খুদা লাগা।
  • ক্লান্তি এবং দুর্বলতা।
  • দৃষ্টিশক্তি বা ঝাপসা হয়ে আসা।
কারা বেশি ঝুঁকিতে

  • ৩০ বছরের নিচে যে কোন বয়সে এটি হতে পারে যদিও শিশু ও কিশোরদের মধ্যেই এটি বেশি দেখা যায়।
  • পরিবারে কারো টাইপ ১ ডায়াবেটিকস থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।
  • এটি এক ধরনের জেনেটিক এবং অটোইমিউন সমস্যা।
চিকিৎসা

টাইপ ১ ডায়াবেটিসের জন্য ইনসুলিন ইনজেকশনই একমাত্র উপায়। রোগীকে নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয় এবং রক্ত শর্করার মাতারা নজরে রাখতে হবে।

টাইপ ২ ডায়াবেটিস কি?

টাইপ ২ ডায়াবেটিকস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে। তবে ইনসুলিন কাজ করতে পারে না। এটি বেশি সাধারণ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ৯০% থেকে ৯৫% ক্ষেত্রে এই ধরনের ডায়াবেটিকস হয়।

লক্ষণ

  • ক্লান্তি ও শক্তির অভাব।
  • দেহে ঘা বা কাটা স্থানে দেরিতে সেরে ওঠা।
  • বারবার সংক্রমণ হাওয়া।
  • দৃষ্টি শক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া।
  • হাত বা পায়ে ঝিঝি ধরা বা অবশ ভাব।
  • কারা বেশি ঝুকিতে ?
  • ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।
  • সৃথুলতা বা অতিরিক্ত ওজন।
  • পরিবারে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ইতিহাস।
  • অস্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়ামের অভাব।
  • উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল সমস্যা।
চিকিৎসা

  • জীবনধারার পরিবর্তন স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়মিত ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণ।
  • ওষুধ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ওষুধ কার্যকর হতে পারে।
  • ইনসুলিন অনেক সময় টাইপ ২ রোগীদেরও ইনসুলিনের প্রয়োজন হয়।

টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মধ্যে পার্থক্য

  1. বিষয় টাইপ ১ ডায়াবেটিস টাইপ ২ ডায়াবেটিস
  2. কারণ অটোইমিউন সিস্টেম দ্বারা ইনসুলিন তৈরি বন্ধ। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বা ইনসুলিনের অভাব।
  3. বয়স শিশু বা কিশোরদের বেশি হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের বেশি হয়।
  4. চিকিৎসা ইনসুলিন ইঞ্জেকশন অপরিহার্য। জীবনধারার পরিবর্তন ওষুধ কখনো কখনো ইনসুলিন।
  5. ঝুকির কারণ জেনেটিক বা অটোইমিউন সমস্যা। স্থূলতা জীবন ধারা এবং পারিবারিক ইতিহাস।



বিশেষ ধারণা

টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস আলাদা ধরনের রোগ হলেও দুটিরই একটি প্রধান লক্ষ্য রক্তে শর্করার মাত্রার নিয়ন্ত্রণে রাখে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই ডায়াবেটিক্স নিয়ে ভয় না পেয়ে সচেতন হয়ে থাকুন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সুস্থ জীবন যাপন করুন।


১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী

১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা প্রাথমিক অবস্থায় সহজে ধরা পড়ে না। ফলে অনেকেই অসচেতনতার কারণে সমস্যা বাড়িয়ে তোলেন। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ দেখলে অবহেলা না করে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করানো উচিত ১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী, কারণ প্রাথমিক অবস্থাতে এটি সনাক্ত করা হলে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ। চলুন দেখে আসি দশটি কারণ কি কি?

  1. এক অতিরিক্ত পিপাসা লাগাঃ যদি দেখেন, স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি পিপাসা পাচ্ছে, তবে এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধির ইঙ্গিত হতে পারে।
  2. দুই বারবার প্রস্রাব হওয়াঃ প্রস্রাবের পরিমাণ এবং ঘনত্ব যদি বাড়ে বিশেষত রাতে বেশি প্রস্তাব করতে হয়, তাহলে সতর্ক হওয়া উচিত।
  3. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়াঃ কোন বিশেষ কারণ ছাড়াই যদি দুটো ওজন কমে যায় তাহলে একটি ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে। এর পরিস্থিতিতে ১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী।
  4. অস্বাভাবিক ক্ষুধা বেড়ে যাওয়াঃ খুব বেশি ক্ষুধা লাগা এবং তা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা রক্তে শর্করার মাত্রা অনিয়মিত হওয়ার লক্ষণ।
  5. শরীরের ক্ষত দেরিতে সাড়াঃযদি শরীরে কোন কাটা বা ক্ষত স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক দেরিতে সাড়ে তাহলে এটি ডায়াবেটিসের আরেকটি ইঙ্গিত হতে পারে।
  6. দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়াঃরক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে চোখে ঝাপসা দেখা বা সাময়িক দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে।
  7. হাত পায়ে ঝিঝি ধরা বা অবশ লাগাঃডায়াবেটিস স্নায়ুতে প্রভাব ফেলে যা হাত পায়ে ঝিঝি ধরা বা অসাড় অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।
  8. চামড়ার অস্বাভাবিক পরিবর্তনঃ ঘাড়,বগল বা কুচকির মতো জায়গায় কালো দাগ পড়া বা ত্বক মোটা হয়ে যাওয়া ডায়াবেটিসের একটি প্রাথমিক লক্ষণ।
  9. বারবার সংক্রমণ হওয়াঃশরীরে যদি বারবার ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়, বিশেষ করে মূত্রনালী বা ত্বকে, তবে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করানো খুবই জরুরী।
  10. অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করাঃঅল্প কাজেই যদি আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং দীর্ঘদিন একটি চলতে থাকে, তবে ১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী।

কেন ডায়াবেটিস পরীক্ষা জরুরী

ডায়াবেটিস প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে তা নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবং জটিলতা এড়ানো সম্ভব। এই দশটি লক্ষণ দেখলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনার স্বাস্থ্য র প্রতি যত্নশীল হোন কারণ ১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী।

আমার মতামত

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন হাওয়া খুবই জরুরী। প্রতিটি লক্ষণ কে গুরুত্ব দিন এবং শরীরের অস্বাভাবিকতা অবহেলা করবেন না। মনে রাখবেন ১০ লক্ষণ দেখা দিলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী। নিয়মিত পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনই সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি।

প্রি ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির উপায়

প্রি-ডায়াবেটিস এমন একটি অবস্থা যেখানে রক্তে শর্করার মাত্র স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয়, তবে ডায়াবেটিস হওয়ার মতো পর্যায়ে পৌঁছায় না। এটি সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে রূপ নিতে পারে। তবে সঠিক জীবন ধারা অনুসরণ করলে প্রি ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আসুন সহজ ভাষায় জানি কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাস গড়ে তুলুন

খাদ্যাভ্যাস আপনার রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখে। কিছু সাধারণ পরামর্শ নিচে দেওয়া হলো-
  • শর্করা নিয়ন্ত্রণ করুনঃ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (G) খাবার যেমন ব্রাউন রাইস ওটস শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খান।
  • প্রতিক্রিজাত খাবার এড়িয়ে চলুনঃ প্যাকেটজাত খাবার চিনি ময়দা এবং অতিরিক্ত তেল বা চর্বিযুক্ত খাবার যতটা সম্ভব কম খাওয়া-দাওয়া করুন।
  • প্রোটিন এবং আঁশযুক্ত খাবারঃ মাছ মুরগির ডাল বাদাম এবং শাকসবজি খেলে রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়ে না।
  • পরিমাণে সচেতনতাঃ একবারে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া উচিত।


নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন

  • ব্যায়াম রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকারী।
  • প্রতিদিন হাঁটুন দিনে অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন বাড়তি ওজন প্রি-ডায়াবেটিসের বড় কারণ।
  • মাংসপেশীর গঠনের ব্যায়ামঃ ওজন তুলে বা হালকা শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম করলে শরীরের ইনসুলিন ব্যবহার করার ক্ষমতা বাড়ে।
ওজনের প্রতি সচেতন থাকুন

  1. বাড়তি ওজন প্রি ডায়াবেটিসের ঝুঁকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
  2. আপনার বি এম আই (BMI) ১৮.৫ থেকে ২৪. ৯ এর মধ্য রাখার চেষ্টা করুন।
  3. পেটের চর্বি কমানোর দিকে বিশেষ নজর দিন।
  4. সেমি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণ করুন
  5. মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খেলে রক্তে শর্করার করার মাত্রা তথ্য বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত মিষ্টি বা কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো

পর্যাপ্ত ঘুমঃ দিনে অন্তত ৭ - ৮ ঘন্টা ঘুমান। চাপমুক্ত জীবনযাপনঃ ধ্যান যোগব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপ করতে সাহায্য করে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন প্রি ডায়াবেটিসের জন্য রক্তের শর্করা নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরী। এতে অবস্থার উন্নতি বা অবতী সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়। 

ধূমপান ও মদ্যপান এরে চলুন ধূমপান এবং অতিরিক্ত মদ্যপান রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করে। এগুলো সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলাই ভালো। পেশাদার স্বাস্থ্য পরামর্শ নিন প্রয়োজন মনে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আপনার খাদ্য তালিকা ও ব্যায়াম পরিকল্পনার জন্য বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন।

কিছু কথা মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ

প্রি-ডায়াবেটিস কোন ও ভয় পাওয়ার বিষয় নয়, বরং এতে সতর্ক হওয়ার সময়। সুস্থ জীবন ধারণার মাধ্যমে আপনি সহজে এটি থেকে মুক্ত পেতে পারেন। পরিবর্তন হয়তো সহজ নয় তবে আপনার পরিশ্রম আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদে সুস্থ জীবন উপহার দেবে।

ডায়াবেটিস চিকিৎসায় নতুন উপায়

ডায়াবেটিস বিশেষত টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস, এমন একটি রোগ যা সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে। যদিও রোগ পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব নয় আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নতির নতুন পথ খুলছে। বিজ্ঞানীদের নতুন নতুন আবিষ্কার ও গবেষণা এই রোগের চিকিৎসায় সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। আসুন সহবাস বাসায় জানি ডায়াবেটিস চিকিৎসার সম্প্রতিক অগ্রগতির কথা।

কৃত্রিম অগ্ন্যাশয় (Artificial Pancreas)

কৃত্তিম অগ্ন্যাশয় এমন একটি ডিভাইস যা টাইপ ১ ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য বিশেষ কার্যকর। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা মাপতে পারে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ইনসুলিন সরবরাহ করে।
  • কিভাবে কাজ করেঃ একটি সেন্সর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ইনসুলিন পাস্প শরীরে ইনসুলিন প্রবাহিত করে।
  • উপকারিতাঃ ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে কোন ঝামেলা নেই রক্তে শর্করার স্বাভাবিক থাকে।
ইনসুলিন প্যাচ

  1. ইনসুলিন নেওয়ার জন্য এখন আর প্রতিদিন ইনজেকশনের প্রয়োজন নেই। ইনসুলিন প্যাচ এক ধরনের আঠালো স্টিকার যা শরীরে লাগিয়ে রাখা হয়। এটি ধীরে ধীরে ইনসুলিন সরবরাহ করে।
  2. উপকারিতাঃ ইনজেকশনের ভয় নেই এবং রক্তে শর্করা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
সেল থেরাপি (Cell Therapy)

টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ গুলো ইনসুলিন তৈরি করতে অক্ষম। সেল থেরাপির মাধ্যমে অগ্ন্যাশয়ে নতুন বেটা কোষ অতি স্থাপন করা হয়।
  • নতুন প্রযুক্তিরঃ স্টেম সেল ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা কার্যকর বিটা কোষ তৈরি করেছেন।
  • সাফল্যঃ কিছু রোগীর ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান দিতে সক্ষম হয়েছে।
স্মার্ট ইনসুলিন

  • স্মার্ট ইনসুলিন এমন একটি ধরনের ইনসুলিন যার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে স্বায়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়।
  • কিভাবে কাজ করবে রক্তে শর্করা মাত্রা কম হলে এটি নির্দিষ্ট হয়ে যাবে আর বাড়লে কাজ শুরু করে।
  • উপকারিতা ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখতে আলাদা করে কিছু করতে হয় না।

ওষুধের নতুন প্রজন্ম

  • GLP-1 রিসেপ্টর অ্যাগোনিস্টঃ এই ওষুধ রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • এসজি এলটি-২ ইনহিবিটাসঃ এটি কিডনির মাধ্যমে বাড়তি শর্করা বের করে দেয়।

ওষুধের নতুন প্রজন্ম


সর্বশেষ কথা

ডায়াবেটিস চিকিৎসায় প্রতিদিন নতুন নতুন আবিষ্কার হচ্ছে। এসব আধুনিক পদ্ধতিতে রোগীদের জীবন সহজ এবং স্বাভাবিক করতে সাহায্য করছে। তবে সঠিক চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যকর জীবন ধারা একসঙ্গে চললে ডায়াবেটিস কে আরো ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার জন্য সেরা পদ্ধতি বেছে নিন এবং আপনি সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

TRIPEZY ITনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url